অনিয়ম-দুর্নীতিতে ডুবছে মনিপুর ও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ
হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা
- আপলোড সময় : ১৯-১১-২০২৫ ০৩:৪০:৩৬ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৯-১১-২০২৫ ০৩:৪০:৩৬ অপরাহ্ন
নেই ল্যাব বা মাল্টিমিডিয়া সংক্রান্ত কোনো সেবা, এক যুগেও প্রকাশ হয়নি কোনো সাময়িকী। তবু বছরে এই দুই খাতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। খোদ সরকারি তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্য। আর কলেজ সরকারিকরণের নির্দেশনা জারি হলেও বেশি বেতন নেয়ার ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারিকরণ প্রক্রিয়া আটকে রেখেছেন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের শিক্ষকদের একাংশ।
বেশ কয়েকবার দেশসেরা প্রতিষ্ঠানে স্বীকৃতি পাওয়া ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিষ্ঠান রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে বছরের শুরুতে ভর্তির জন্য নেয়া হয় ৮ হাজার টাকা। রসিদ দিলেও তাতে উল্লেখ নেই কোনো খাত। তাই বছরের পর বছর অন্ধকারে অভিভাবকরা।
তারা বলছেন, ভর্তির জন্য ৮ হাজার টাকা করে নেয়া হয়। কিন্তু এ টাকা কোন খাতে যায়, সেটা অভিভাবকরা জানেন না!
পরিদর্শন ও নীরিক্ষা অধিদফতরের তদন্তে উঠে এসেছে, জনপ্রতি ১৫০ টাকা আদায় করা হয় বার্ষিক সাময়িকীর জন্য। বেতনের সঙ্গে প্রতি মাসে আইসিটি, ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ফি বাবদ ১৫০ টাকা আদায় করা হয়। বছরে এই দুই খাতে কয়েক কোটি টাকা নেয়া হলেও ১৩ বছর ধরে প্রকাশ হয়নি কোনো সাময়িকী। ল্যাব বা মাল্টিমিডিয়া সংক্রান্ত কোনো সেবাও দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি।
সহকারী প্রধান শিক্ষক নূরুল আলম বলছেন, ১৩ বছরের অচলায়তন ভেঙে আগামী বছর থেকে প্রকাশ করা হবে স্মরণিকা। ঠিক করা হয়েছে সম্পাদকও।
এদিকে, জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি পায় রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে। নির্দেশনা জারির ৬ বছরেও সরকারি না হওয়ায় মাসে শুধু বেতন বাবদই শিক্ষার্থীদের দিতে হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা, যেখানে সরকারি হওয়া কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়ছেন মাত্র ২৫ টাকা বেতনে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম মেম্বার প্রয়াত মতিয়া চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ এমরান হোসাইন ও দলটির সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর ঘনিষ্ঠ সাদেকিন রহমান ভূঁইয়াসহ শিক্ষকদের একটি অংশ আটকে রেখেছেন সরকারিকরণ প্রক্রিয়া।
সরকারিকরণের নির্দেশনা জারির পর ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে সব পদোন্নতি স্থগিত রাখার কথা থাকলেও বিগত সরকারের আমলে ২০২১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে পদোন্নতি নিয়েছেন সাতজন শিক্ষক। ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে দৈনন্দিন ব্যয়ের বাইরে নগদ ও ব্যাংকে সংরক্ষিত অর্থ থেকে ব্যয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ২০২০ থেকে অদ্যাবধি ছয়জন শিক্ষক প্রায় ৪৩ লাখ টাকার অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়ম কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের পাশাপাশি দুর্নীতিরোধে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেহেতু এখানে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অতিরিক্ত বেতন ইত্যাদি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে, তাই এ ধরনের প্রতিষ্ঠান স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য সরকারের উচিত একটা সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করে মান্য করার বাধ্যবাধকতা তৈরি করা।
এদিকে বিগত সরকারের আমলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় যে দুর্নীতি হয়েছে তা রোধে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মনিটরিংয়ের কথা বলছে বর্তমান প্রশাসন ও পরিচালনা পর্ষদ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
স্টাফ রিপোর্টার